এ এ রানা::
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার
বিভিন্ন স্পটে প্রকাশ্যে দিবালোকে রমরমা জুয়ার ব্যবসা চল্লেও পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ?
২সেপ্টেম্বর বিকালে সরেজমিন পরিদর্শন করে এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায় পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই চলে জুয়ার রমরমা ব্যবসা। সাপ্তাহিক হলি সিলেটের প্রতিবেদক বিকাল ৪ টার সময় উত্তর সুরমা থেকে খেয়া পার হয়ে দক্ষিণ সুরমা যাওয়ার সময় কীনব্রিজের নীচে উৎসুক জনতার ভীড় দেখে ছবি তুলতে গেলে জুয়ারী আখতার, নজরুল, কামাল, আকাশ ও মন্নান ঐ প্রতিবেদককে ঘিরে ফেলে এসময় কীনব্রিজের গোড়ায় দায়িত্ব পালনরত পুলিশ বসে চা খেলেও কিজন্য বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলো তা না জেনে তাদেরকে দূরে সড়িয়ে দেন।
পরে হলি সিলেটের প্রতিনিধিদল জুয়ারীদের রুদ্রমূর্তি দেখে নিজের নিরাপত্তার জন্য তাদের চাপে মোবাইলে ধারনকরা কিছু ছবি ডিলিট করে দিয়ে তাদের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করেন।
তাদের কাছ থেকে মুক্ত হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার কদমতলী ফাড়িঁর ইনচার্জ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ঐ প্রতিবেদককে বলেন আমি ছিনতাকারী আসামী নিয়ে ব্যস্ত। আপনি উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন, আমি কিছু করতে পারবোনা। পরে আবার বলেন আমি ডিউটি পুলিশকে পাঠাচ্ছি। এর পর ঐ প্রতিবেদক পুলিশের জন্য এক ঘন্টা বসে থাকলেও ডিউটি পুলিশ আর আসেনি। পরে তিনি বাসায় চলে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কীন ব্রিজের উন্নয়ন কাজ করতে দুই মাসের জন্য ব্রিজে মানুষ ও যান চলাচ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ব্রিজ বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ মানুষ ব্রিজের নিচ দিয়ে খেয়া পার হয়ে উত্তর ও দক্ষিণ সুরমায় যাতায়াত করেন।
এই সুযোগে জুয়ারী চক্র কীন ব্রিজের নিচে জান্ডি মান্ডু, তিন তাস ও শিলং তীর নামক জুয়ার আসর বসিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
বিভিন্ন অঞ্চল থেকে
দক্ষিণ সুরমা হয়ে সিলেটে বিভিন্ন জরুরি কাজে আসা সাধারণ মানুষ তাদের ক্ষপ্পরে পরে নির্দিষ্ট কাজ না করেই জুয়ার লোভে পরে সবকিছু হারিয়ে খালি হাতে বাসায় ফিরে। ফলে প্রতারিত সাধারণ মানুষ বাড়িতে গিয়ে তার কাজের টাকা জোগাড় করতে জড়িয়ে পরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। তাই পরিবারে বাড়ছে অশান্তি সমাজে বাড়ছে অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, প্রতিদিন দুপুর দুইটা থেকে মধ্যেরাত পর্যন্ত চলে তাদের অবৈধ জুয়ার রমরমা ব্যবসা।
ইতিমধ্যে দক্ষিণ সুৱমা নগরবাসীর কাছে জুয়ার বাজার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কীন ব্রিজের দক্ষিণ পাস মহানগরীর সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকার একটি। সেই কীন ব্রিজের নিচে প্রকাশ্যে দিবালোকে পুলিশকে ম্যানেজ করে শীলং তীর, তিনতাস, জান্ডু মান্ডু নামক জুয়ার আসর বসিয়ে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে জুয়ারী চক্র । স্থানীয় থানা পুলিশ এসব এ ব্যবসার খবরাখবর জানলেও অদৃশ্য কারণে তারা নিরব ভূমিকা পালন করছে। স্থানীয়রা এই প্রতিবেদককে পুলিশের বিরোদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, কীনব্রিজের নীচের বোর্ড থেকে পুলিশ দৈনিক ১০হাজার টাকা পায় তাই তারা নিরব ভূমিকা পালন করে।
উল্লেখ্য কিছুদিন আগে হলি সিলেটে জুয়ার সংবাদ প্রকাশের পর ২১ জুলাই দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১১ জুয়াড়িকে আটক করে।এরপর দক্ষিণ সুরমায় সপ্তাহখানেক জুয়াৱ সকল বোর্ড বন্ধ ছিল, এখন আবার চালু হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে জুয়ার বোর্ড থেকে প্রতারিত নিম্ম আয়ের মানুষকে আটক করলেও বোর্ড মালিকরা সব সময় থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে, ফলে জুয়ার ব্যবসা বন্ধ করা যাচ্ছে না।
উত্তর সুরমা এবং দক্ষিণ সুরমার মিলন স্থল কদমতলী টার্মিনাল সংলগ্ন ক্নীন ব্রিজের আশপাশ যেন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে মাদক, জুয়া,দেহ ব্যবসা, সবই চলে নিয়মিত।
এসব অপকর্ম পুলিশের সামনে কিভাবে সম্ভব সেই প্রশ্ন স্থানীয়দের। তারা বলেন প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণে দিন দিন দক্ষিণ সুরমায় অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এসব জুয়ার ব্যবসার ফাঁকে দেদারছে চলে মদ, গাঁজা, ইয়াবা সেবন ও বিক্রি। (চলবে) আগামী পর্বে প্রত্যেক জুয়ারীকে নিয়ে থাকবে বিশেষণ প্রতিবেদন।